একটি সুস্পষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিএনপি। বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৈঠকে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি লিখিত চিঠি হস্তান্তর করে। চিঠিতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন, ১/১১ ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার, এবং অবিলম্বে নির্বাচনী সংস্কার ও রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
বৈঠক শেষে সংবাদকর্মীদের মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি— যদি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হয়, তাহলে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।”
তিনি আরও জানান, সরকার আগামী ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬-এর মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। তবে এখনো নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ বা চূড়ান্ত সময়সূচি দেওয়া হয়নি। এই অনিশ্চয়তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা এমনভাবে খারাপের দিকে যাবে, যেটা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।”
বৈঠকে আরও আলোচনা হয় নির্বাচনী সময়কালীন রোডম্যাপ, রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক মামলার প্রত্যাহার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার প্রসঙ্গে।
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বৈঠক শেষে জানান, “ডিসেম্বর থেকে জুন মানে এই নয় যে আমরা জুন পর্যন্ত টেনে নেব—এমন কোনো পরিকল্পনা নেই। সবকিছু নির্ভর করছে নির্বাচনসংক্রান্ত সংস্কার, বিচারিক প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর।”
বিএনপি মনে করে, অধিকাংশ সংস্কার কাজ হওয়া উচিত একটি নির্বাচিত সরকারের অধীনে। ফখরুল বলেন, “আমরা বলেছি—সব দল যে বিষয়ে একমত, সেগুলোর ভিত্তিতে একটি সনদ তৈরি করে নির্বাচনমুখী হওয়া সম্ভব।”
দলের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি জানান, “আমরা নিজেদের দল ও জোটসঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনা করে আবার সংবাদমাধ্যমের সামনে আসব, তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাব।”
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ