বিজিবির বাঁধায় ভারতীয় নাগরিককে পুশ ইন করতে পারেনি বিএসএফ

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার খাটিয়ামারী সীমান্তে মধ্যরাতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যখন ভারত থেকে কয়েকজন রোহিঙ্গা ও ভারতীয় নারী-শিশুকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করার চেষ্টা করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তবে বিজিবির তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত ওই চেষ্টাটি ব্যর্থ হয়।

রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে রৌমারী উপজেলার খাটিয়ামারী সীমান্তে এই ঘটনাটি ঘটে। আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ১০৬৩-এর সাব-পিলার ৩ এলাকাটি এই উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এখানেই ভারতের জোরডাঙ্গা বিএসএফ ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা নাগরিকদের পাশাপাশি কিছু ভারতীয় নারী ও শিশুকে সীমান্ত অতিক্রম করিয়ে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়।

রৌমারী বিওপি ক্যাম্পের বিজিবি টহল দল ওই সময় শূন্যরেখায় এক নারীকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে জানা যায়, তিনি একজন ভারতীয় নাগরিক। এ বিষয়ে রৌমারী কোম্পানি সদর ক্যাম্পের সুবেদার সোহেল রানা জানান, “ওই নারীর বাড়ি ভারতে, এটি সত্য। তবে তিনি দাবি করছেন, খাটিয়ামারীর এক ব্যক্তির স্ত্রী তিনি। তার স্বামী বর্তমানে জেলে রয়েছেন।”

বিজিবি আরও জানায়, বিএসএফকে এই নারীর বিষয়ে অবহিত করা হলেও তারা দাবি করে, তিনি বাংলাদেশি নাগরিক। এ কারণে তাকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি। বিজিবির পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, এটি কোনো পুশ-ইনের ঘটনা নয়, এবং এ নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়নি।

ঘটনার পরপরই একটি ৪৩ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, সীমান্তবর্তী খাটিয়ামারীসহ আশপাশের গ্রামগুলোর সাধারণ মানুষ শূন্যরেখার কাছে গিয়ে জড়ো হন। তারা সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে সেখানে উপস্থিত হন।

রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “সীমান্ত এলাকায় এমন ঘটনা স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। আমরা চাই, উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী আরও সমন্বিতভাবে কাজ করুক যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।”

যদিও ঘটনার পর দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়, তবে তা দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চালানো হবে এবং এ ধরনের ঘটনা যেন পুনরায় না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply