ওজন কমানো অনেকের কাছেই একটি চ্যালেঞ্জ। তবে শুধুমাত্র ব্যায়াম করলেই হবে না, সঠিক খাদ্যাভ্যাসও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশেষ করে রাতের খাবারে কিছু নির্দিষ্ট খাবার খাওয়া ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হতে পারে। কারণ রাতে শরীরের বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়, ফলে কিছু খাবার সহজে হজম হয় না এবং চর্বিতে পরিণত হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ৮টি খাবারের কথা, যেগুলো রাতের খাবারে না খাওয়াই ভালো।
১. সাদা ভাত
সাদা ভাতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অনেক বেশি এবং এতে ফাইবার খুবই কম। এটি রক্তে চিনি বাড়িয়ে দেয় এবং রাতে খেলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি বাড়ায়। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য এটি একটি এড়িয়ে চলার খাবার।
২. ভাজা খাবার
তেলে ভাজা যেকোনো খাবারে থাকে উচ্চমাত্রার ক্যালরি ও চর্বি। এ ধরনের খাবার হজমে সময় নেয় এবং রাতের বেলা শরীরে চর্বি জমার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। ওজন কমানোর লক্ষ্যে এই খাবারগুলো রাতের মেনু থেকে বাদ দেওয়াই ভালো।
৩. ময়দার রুটি
ময়দার রুটি দেখতে যতই সাধারণ লাগুক, এতে ফাইবার ও প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ খুবই কম। খাওয়ার পর পেট ভালোভাবে না ভরায়, ফলে মানুষ অতিরিক্ত খেয়ে ফেলে—এতে করে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
৪. ক্রিম বা মাখন দেওয়া ঘন তরকারি
এ ধরনের ঘন তরকারিতে উচ্চমাত্রার চর্বি ও ক্যালরি থাকে। রাতের বেলা শরীর বিশ্রামে চলে যাওয়ায় অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে পারে না, যার ফলে চর্বি জমে এবং ওজন বৃদ্ধি পায়।
৫. মিষ্টি ও ডেজার্ট
রাতের খাবারের পরে অনেকেই মিষ্টি বা ডেজার্ট খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু এসব খাবারে থাকে উচ্চমাত্রার চিনি ও ক্যালরি, যা দেহে জমে যায় এবং চর্বিতে রূপান্তরিত হয়। ফলে ওজন কমানোর পথে এটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
৬. প্রক্রিয়াজাত খাবার
প্রক্রিয়াজাত খাবারে সাধারণত সংরক্ষক, অতিরিক্ত লবণ ও ট্রান্স ফ্যাট থাকে। এসব উপাদান শরীরের বিপাকক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং চর্বি পুড়তে দেয় না, বরং তা জমে গিয়ে ওজন বাড়িয়ে তোলে।
৭. অতিরিক্ত ভাত-নির্ভর খাবার
ভাত সাধারণত হালকা মনে হলেও এতে উচ্চমাত্রার কার্বোহাইড্রেট থাকে। রাতের বেলায় অতিরিক্ত ভাত খাওয়া হলে তা সহজেই শরীরে জমে ওজন বৃদ্ধি ঘটায়।
৮. চিনিযুক্ত পানীয়
চিনিযুক্ত পানীয় যেমন সফট ড্রিংকস বা ফলের ফ্লেভারযুক্ত পানীয়তে থাকে ফাঁকা ক্যালরি ও প্রচুর চিনি। এগুলো শরীরে কোনো পুষ্টি না দিয়ে শুধু চর্বি বাড়ায়। রাতে এ ধরনের পানীয় পান করা মানেই ওজন বাড়ার দাওয়াত।
ওজন কমাতে চাইলে শুধু ব্যায়াম নয়, খাদ্যাভ্যাসেও আনতে হবে পরিবর্তন। বিশেষ করে রাতের খাবারে সচেতনতা রাখা জরুরি। উপরোক্ত খাবারগুলো এড়িয়ে চললে রাতের বেলা শরীর তার স্বাভাবিক ফ্যাট মেটাবলিজম বজায় রাখতে পারে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ