আফগান নারী ক্রিকেটারদের সুখবর দিলো আইসিসি

তালেবান সরকার আফগানিস্তানে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নারীদের বিভিন্ন মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। বিশেষত শিক্ষা ও খেলাধুলার ক্ষেত্রে তাদের ওপর জারি করা হয়েছে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নার্সিং ও মিডওয়াইফ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোও।

এই অবস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন আফগান ক্রিকেট দলের তারকা খেলোয়াড় মোহাম্মদ নবি ও রশিদ খান। তাদের অবস্থান এই সংকটে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

২০২০ সালে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি) নারী ক্রিকেটে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিল। ২৫ জন নারী ক্রিকেটারকে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু তালেবান শাসনের শুরুতেই সেই উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতির চাপে অনেক নারী ক্রিকেটার ক্রিকেটসামগ্রী পুড়িয়ে ফেলেন। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।

এই দুঃসময়ে আফগান নারী ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়িয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। নির্বাসিত নারী ক্রিকেটারদের সহায়তার লক্ষ্যে আইসিসি একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে। এই টাস্ক ফোর্সের আওতায় নারী ক্রিকেটারদের দেওয়া হবে আর্থিক সহায়তা, আধুনিক প্রশিক্ষণ, মেন্টরিং ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা।

এই উদ্যোগে আইসিসির পাশাপাশি অংশ নিচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই), ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) এবং ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। এই বোর্ডগুলো যৌথভাবে নির্বাসিত আফগান নারী ক্রিকেটারদের জন্য একটি তহবিল গঠন করবে।

আইসিসির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা শুধু অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত ১৯ জন নারী ক্রিকেটারকেই বিবেচনায় নিচ্ছি না, বরং যাঁরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের সকলকেই আমরা এই পরিকল্পনার আওতায় আনব।” তিনি আরও বলেন, আফগান নারী ক্রিকেট দলকে এখনও অফিসিয়াল গণনায় না আনলেও আইসিসি এই ইস্যুর সমাধানে আইনগত ও সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।

আইসিসি ও সহযোগী বোর্ডগুলো এই তহবিল গঠনের জন্য আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) কাছ থেকে কোনো অর্থ গ্রহণ করবে না। বরং, নিজেদের অর্থায়নেই তারা নারী ক্রিকেটারদের সহায়তা করবে।

বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন, ক্যানবেরা এবং অন্যান্য শহরে শরণার্থী হিসেবে অবস্থান করছেন সাবেক আফগান নারী ক্রিকেটার ফিরোজা আমিরি, বেনাফশা হাশিমি এবং আরও অনেকেই। এই বিশেষ উদ্যোগ তাঁদের নতুন করে জীবন গড়ার আশা জোগাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply