বাংলা গানের বিখ্যাত ব্যান্ড চন্দ্রবিন্দুর জনপ্রিয় গান ‘এভাবেও ফিরে আসা যায়’—বাংলা বলতে জানলে হয়তো এই গানটাই গত ম্যাচে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সমস্বরে গাইতেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড়রাসহ গ্যালারি ভর্তি দর্শক-সমর্থকরা। কারণ, তাদের দলের এমন প্রত্যাবর্তন সত্যিই বিস্ময়কর!
চ্যাম্পিয়নস লিগে এই কাজটি নিয়মিত করে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে এবার ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সেই অবিশ্বাস্য ফিরে আসার গল্প লিখেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ৪-২ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা দলটি ম্যাচের শেষ ৭ মিনিটে তিন গোল করে জয় ছিনিয়ে নেয় এবং ৫-৪ ব্যবধানে জিতে নেয় ম্যাচটি। দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ ব্যবধানে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে রেড ডেভিলসরা।
৮৯ মিনিটে লিওনের এক খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে সংখ্যাগত দিক দিয়ে এগিয়ে যায় ম্যানইউ। এতে অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটে গোল করার দারুণ সুযোগ পায় তারা। কিন্তু ঠিক উল্টোটা ঘটে। ১০৪ ও ১০৯ মিনিটে গোল খেয়ে হারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় ইউনাইটেড। লিওনের হয়ে গোল দুটি করেন রায়ান চেকরি এবং পেনাল্টি থেকে আলেক্সজান্ডার লাজাকাতে।
৪-২ গোলে পিছিয়ে থাকা ম্যানইউর জন্য এক সুবর্ণ সুযোগ আসে ১১৪ মিনিটে। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে ম্যাচে ফেরান অধিনায়ক ব্রুনো ফার্নান্দেজ। এরপর ১২০ মিনিটে সমতা ফেরান তরুণ মিডফিল্ডার কোবি মাইনু। সবাই তখন ভাবছিলেন ম্যাচটি গড়াবে টাইব্রেকারে।
তবে ভাগ্য অন্য কিছু লিখে রেখেছিল ম্যানইউর জন্য। অতিরিক্ত সময়ের যোগ করা প্রথম মিনিটে হেড দিয়ে জয়সূচক গোল করেন হ্যারি ম্যাগুয়ের। এক সময় যিনি ভুলের জন্য সমালোচনার শিকার ছিলেন, তাকেই ঘিরেই শেষ মুহূর্তে উল্লাসে ফেটে পড়ে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড।
ম্যাচের শুরু থেকেই দাপট দেখায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। প্রথমার্ধে ম্যানুয়েল উগার্তে ও দিয়াগো দালোতের গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল দলটি। তবে বিরতির পর লিওনের তলিসো ও নিকোলাস তাগলিয়াফিগো ছয় মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে ম্যাচে ফেরেন।
একটি সময় যেখান থেকে ফিরে আসা প্রায় অসম্ভব মনে হচ্ছিল, ঠিক সেই জায়গা থেকেই ফিরে এসে জয় ছিনিয়ে নেয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ফুটবল সত্যিই এক অনিশ্চয়তার খেলা—এটা আবারও প্রমাণ হলো। এবার দেখার বিষয়, ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে কেমন পারফর্ম করে এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের নায়করা।
তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ