রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এলাকা ‘যমুনা’ চত্বর আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে আয়োজিত চলমান বিক্ষোভে আজ এক জোরালো ও আবেগঘন বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
ড. মাসুদ বলেন, “সম্মানিত ভাই-বোনেরা, ছাত্র জনতা, সম্মানিত শ্রমিক ভাইয়েরা, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে শুধু একটি সরকারের পতন হয়নি, পতন হয়েছে এক গনহত্যাকারী, ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক শক্তির। এটা ছিল শুধু একজন আওয়ামী নেতার পতন নয়, বরং গত ১৭ বছরের একচেটিয়া রাজনৈতিক আধিপত্যের অবসান।”
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, “যারা সে সময় জীবন বাজি রেখে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, আবু সাইদ মুগ্ধসহ সকল সাহসী যোদ্ধাদের, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।” তিনি আওয়ামী লীগের অতীতের গণহত্যার উদাহরণ টেনে বলেন, “২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর, ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে শাপলা চত্বরে চালানো গণহত্যা ছিল তার জ্বলন্ত উদাহরণ।”
ড. মাসুদের ভাষ্যমতে, “বাংলাদেশের জনগণ যখন আওয়ামী লীগের পতনের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল, তখন শুধু সরকার পতন হয়নি, বরং তারা গুষ্টিসহ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এবং এই পালানোর ধারা এখনো অব্যাহত।”
তিনি আরও বলেন, “আজকে আমরা এখানে রাজনৈতিক দল হিসেবে আসিনি। আমরা এসেছি এদেশের ১৮ কোটি জনগণের ঐক্যমতের ভিত্তিতে। এই ছাত্র জনতাকে নির্বিঘ্নে ঘরে ফেরার সুযোগ দিতে হলে, গনহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে।”
বক্তব্যে স্পর্শকাতর এলাকা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন ড. মাসুদ। তিনি বলেন, “আমাকে যখন বলে, এই জায়গা স্পর্শকাতর, আমি বলি—এই যমুনার চারপাশ যেমন স্পর্শকাতর, তেমনি আমাদের দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবন আরও বেশি স্পর্শকাতর।”
ড. মাসুদ অভিযোগ করেন, “যখন দেশের জনগণ আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনে নেমেছে, তখন কেউ কেউ তা দমন করার চেষ্টা করছে।” তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যারা বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল, তারাই আজ এখানে উপস্থিত। বিজয় ছাড়া দেশের জনগণ আর ঘরে ফিরবে না।”
এই বক্তব্য বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনার জন্ম দেয়। যমুনা চত্বর বারবার স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এই সরাসরি সংহতি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনায় দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ কোন দিকে এগোবে, তা নিয়ে এখন তীব্র আলোচনা চলছে।
সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ