গৌরীর রেস্তোরাঁয় ‘ভেজাল খাবার’ পরিবেশন!

বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের স্ত্রী ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গৌরী খান ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুম্বাইয়ে রাজপ্রাসাদের মতো এক রেস্তোরাঁ চালু করেন, যার নাম ‘তরী’। রেস্তোরাঁটি খোলার পর থেকেই এর নান্দনিক সাজসজ্জা নিয়ে প্রশংসায় ভাসছিলেন গৌরী খান। তবে সম্প্রতি তরীর পরিবেশিত খাবার নিয়ে উঠেছে বিতর্ক, বিশেষ করে সেখানে পরিবেশিত পনিরের গুণগত মান নিয়ে।

মুম্বাইয়ের জনপ্রিয় ফুড ব্লগার ও ইনফ্লুয়েন্সার সার্থক সচদেব এক ভিডিওতে দাবি করেন, তরী রেস্তোরাঁয় নকল পনির পরিবেশন করা হচ্ছে। এই দাবি জানার পরই শুরু হয় সামাজিকমাধ্যমে সমালোচনার ঝড়। ফুড রিভিউয়ার হিসেবে খ্যাত সার্থক সচদেব এর আগেও মুম্বাইয়ের একাধিক তারকাদের রেস্তোরাঁ যেমন বিরাট কোহলি, ববি দেওল, ও শিল্পা শেঠির খাবারের মান নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

তবে গৌরীর রেস্তোরাঁয় পরীক্ষার পর তার অভিজ্ঞতা একেবারেই ভিন্ন ছিল। ভিডিওতে দেখা যায়, তরীতে পরিবেশিত পনিরে আয়োডিন ফেলা হলে তা কালো রঙ ধারণ করে। এই পরীক্ষাটি মূলত স্টার্চ শনাক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়। আয়োডিনের সংস্পর্শে পনির যদি কালো কিংবা নীল রঙে রূপান্তরিত হয়, তাহলে বোঝা যায় সেখানে স্টার্চ রয়েছে। ঠিক এমনটিই ঘটে তরীর পনিরে। ভিডিওতে সার্থককে হতবাক হয়ে বলতে শোনা যায়, “শাহরুখ খানের রেস্তোরাঁয় নকল পনির পরিবেশন হয়! দেখে তো আমি হতবাক হয়ে গেলাম।”

এই ভিডিও প্রকাশের পর তরীর বিরুদ্ধে সামাজিকমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ, পরিস্থিতি সামাল দিতে গৌরী খানের তরী রেস্তোরাঁর পক্ষ থেকে সার্থকের ভিডিওর মন্তব্যের ঘরেই একটি প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।

তরীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, “আয়োডিন পরীক্ষা কেবলমাত্র পনিরে স্টার্চ আছে কিনা তা শনাক্ত করে, এটি প্রমাণ করে না যে পনিরটি আসল না নকল। আমাদের পরিবেশিত পনিরে সোয়া-ভিত্তিক উপাদান রয়েছে, যা আয়োডিনের সংস্পর্শে রঙ পরিবর্তন করতে পারে। তবে আমরা সবসময় আমাদের অতিথিদের বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পনির পরিবেশন করে থাকি। এতে কোনও ভেজাল নেই।”

এদিকে এই ইস্যুতে পুষ্টিবিদ কিরণ সোনিও সার্থক সচদেবের দাবিকে খানিকটা খণ্ডন করেছেন। তার বক্তব্য, “আয়োডিন টেস্ট কোনো পনির নকল কিনা, তা নির্ধারণ করতে পারে না। এই পরীক্ষায় কেবলমাত্র স্টার্চ আছে কি না, সেটাই বোঝা যায়।”

যদিও তরী রেস্তোরাঁর পক্ষ থেকে যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, তবে সমালোচনার ঝড় এখনো পুরোপুরি থামেনি। অনেকেই বলছেন, নামি ব্র্যান্ড বা তারকাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি, বিশেষ করে খাবারের মানের ক্ষেত্রে।

ঘটনার পরিণতি কী হবে তা এখনই বলা না গেলেও, রেস্তোরাঁ ব্যবসায় গৌরী খানের পথচলা যে সহজ হচ্ছে না, তা বলাই বাহুল্য।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply