লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী সীমান্তে ঘাস কাটতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে হাসিবুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে ভারতের বিএসএফ ও পুলিশ বাংলাদেশের বিজিবি এবং পুলিশকে নিহত যুবকের মরদেহ হস্তান্তর করেছে। গভীর রাতে জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
নিহত হাসিবুল ইসলাম উপজেলার সিংগীমারী এলাকার জাহিদ ইসলামের ছেলে। তিনি মাত্র ৫ মাস আগে বিয়ে করেছিলেন এবং তার স্ত্রী-সহ ঢাকার একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। সাত দিন আগে তিনি বাড়িতে বেড়াতে আসেন।
গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) হাসিবুল সিংগীমারী সীমান্ত এলাকায় ঘাস কাটতে গেলে ভারতের ১৫৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ফুলবাড়ি ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে কয়েকটি গুলি করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি গুরুতর আহত হন।
পরে বিএসএফ সদস্যরা তাকে রাইফেলের বাট ও হাতে থাকা লাঠি দিয়ে মেরে টেনেহিঁচড়ে ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যান। শীতলকুচি থানার স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার অবস্থা আরও খারাপ হয়। পরে তাকে কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি সেখানে মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনার পর বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তারপর বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ভারতের কোচবিহার জেলার শীতলকুচি থানার সীমান্ত ও বাংলাদেশের লালমনিরহাটের পাটগ্রামের খারিজা জোংড়া সীমান্তবর্তী স্থান দিয়ে হাসিবুলের মরদেহ বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় ভারতের ১৫৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের মহেশমারী ক্যাম্পের কমান্ডার রাজ কুমার, শীতলকুচি থানার ওসি, বাংলাদেশের ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের খারিজা জোংড়া ক্যাম্পের সুবেদার রেজাউল ইসলাম, পাটগ্রাম থানার এসআই তাজরুল ইসলাম, নিহত যুবকের বাবা জাহিদুল ইসলাম ও চাচা রশিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতেই নিহতের মরদেহ তার বাবা ও চাচার কাছে হস্তান্তর করে থানা পুলিশ। এরপর রাত ১টার দিকে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায় এবং রাত ২টায় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পাটগ্রাম থানার ওসি আশরাফুজ্জামান সরকার জানান, ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফ মরদেহ হস্তান্তরের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ নিহতের বাবা ও চাচাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ