সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে মোবাইল কিনলেন মা!

টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌর শহরের শেওড়াতলা এলাকায় একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। মাত্র চার মাস বয়সী শিশুকে বিক্রি করে তার মা মোবাইল, পায়ের নূপুর এবং নাকের নথ কিনেছেন। শিশুটির বাবা জানালেন, তার স্ত্রী ৪০ হাজার টাকায় তাদের সন্তানকে বিক্রি করেছে এবং এখন পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে।

ঘটনাটি ঘটে ১৭ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। মধুপুরের শেওড়াতলা এলাকায় পুলিশকে বিষয়টি জানায় শিশুটির বাবা রবিউল ইসলাম। ১০ এপ্রিল, একজন ব্যক্তির সহায়তায় তার স্ত্রী লাবনী আক্তার লিজা তাদের সন্তান তামিমকে সিরাজগঞ্জে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পরে সেই টাকায় তিনি মোবাইল, পায়ের নূপুর এবং নাকের নথ কিনেছেন বলে জানিয়েছেন।

রবিউল ইসলাম এবং লাবনী আক্তার লিজার মধ্যে পারিবারিক অশান্তি ছিল। দুজনের বিয়ে হয়েছিল দুই বছর আগে, ফেসবুকে পরিচয়ের পর। তবে রবিউলের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয় এবং এক সময় তারা আলাদা হয়ে বসবাস শুরু করেন। গত চার মাস আগে তাদের সংসারে জন্ম নেয় পুত্রসন্তান তামিম। তবে সম্প্রতি লাবনী তার সন্তানকে বিক্রি করে দেন।

লাবনী আক্তার লিজা পুলিশকে জানিয়েছেন, “আমার মাথা ঠিক ছিল না। আমি মনির নামের একজনের সহযোগিতায় ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক লোকের কাছে ৪০ হাজার টাকায় তামিমকে বিক্রি করেছি। ওই টাকা দিয়ে আমি মোবাইল, পায়ের নূপুর ও নাকের নথ কিনেছি। এটা ভুল হয়েছে।”

শিশুর বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, “আমাদের ছেলে তামিমের জন্মের পর থেকে সংসারে শান্তি নেমে আসে। অল্প কয়েক দিন আগে লাবনী আমার ছেলে তামিমকে নিয়ে লাবনীর বোনের বাড়ি ভূঞাপুরে যায়। কয়েক দিন পর বাড়ি আসতে বললে লাবনী দুর্ব্যবহার করে এবং সাফ জানিয়ে দেয় যে সে আমার সঙ্গে ঘরসংসার করবে না।” এক পর্যায়ে লাবনী তাকে জানায় যে, সে তাদের সন্তানকে বিক্রি করেছে। তারপর রবিউল ইসলাম কৌশলে লাবনীকে ভূঞাপুর থেকে পাকুটিয়ায় ডেকে এনে ধরে বাড়ি নিয়ে আসেন।

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল কবীর জানিয়েছেন, “লাবনী নামের এক মা তার ছেলেকে বিক্রি করেছে বলে আমাদের জানিয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

তথ্য সূত্র: ইত্তেফাক

Leave a Reply